থাইরয়েড টেস্ট কেন করা হয় | গর্ভাবস্থায় থাইরয়েড কমানোর উপায় ২০২৫
থাইরয়েড কমানোর উপায় - থাইরয়েড বর্তমানে প্রায় প্রতিটি ঘরেই প্রভাবিত করছে। এই রোগটি গলায় অবস্থান করে এবং দেখতে প্রজাপতির মতো। থাইরয়েড গ্রন্থিটি শরীরের বিভিন্ন বিপাকীয় ক্রিয়ার নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
হাইপোথাইরয়েডিজম এবং হাইপারথাইরয়েডিজম হল দুটি সাধারণ থাইরয়েড রোগ, যা আমাদের শক্তি তৈরি ও ব্যবহারের প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে।
যদিও থাইরয়েডকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করার কোনো প্রতিকার নেই, তবে কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে যার মাধ্যমে এটিকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। চলুন নিচে থাইরয়েড কমানোর জন্য কিছু ঘরোয়া উপায় দেখে নেই।
তাই আজ আমি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব থাইরয়েড কমানোর উপায় নিয়ে । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন ।
আরো পড়ুন - সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায় ২০২৪
নগদে সর্বনিম্ন কত টাকা ক্যাশ আউট করা যায়
ওয়ালটন ফ্রিজ ১৩ সেফটি দাম ২০২৪
থাইরয়েড টেস্ট কেন করা হয়
- থাইরয়েড গ্রন্থি যথাযথভাবে হরমোন তৈরি করছে কিনা তা নির্ধারণ করার জন্য।
- হাইপোথাইরয়েডিজম (আন্ডারঅ্যাক্টিভ থাইরয়েড) বা হাইপারথাইরয়েডিজম (অতি সক্রিয় থাইরয়েড) এর মতো অবস্থা সনাক্ত করার জন্য।
- গর্ভবতী নারীদের থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করা হয় কারণ এটি গর্ভের শিশুর বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
- থাইরয়েড ক্যান্সারের ঝুঁকি নির্ণয় করার জন্য ।
- থাইরয়েড ওষুধের কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ করার জন্য ।
- অন্যান্য রোগের অংশ হিসেবে থাইরয়েডের কার্যকারিতা পরীক্ষা করার জন্য ।
থাইরয়েড কমানোর উপায়
মানুষের শরীরে সাধারণত দুই ধরনের থাইরয়েড সমস্যা দেখা যায়: হাইপারথাইরয়েডিজম ও হাইপোথাইরয়েডিজম। যখন থাইরয়েড গ্রন্থিতে অতিরিক্ত হরমোন তৈরি হয়, তখন তাকে হাইপারথাইরয়েডিজম বলা হয়। অপরদিকে, পর্যাপ্ত বা অল্প পরিমাণে হরমোন তৈরি হলে তাকে হাইপোথাইরয়েডিজম বলে।
থাইরয়েড সমস্যা প্রধানত স্ট্রেস এবং ডায়েটের সমস্যার কারণে হয়ে থাকে। তবে কিছু ঘরোয়া উপায় এবং নিয়মকানুন রয়েছে যার মাধ্যমে থাইরয়েডের প্রভাব কমানো সম্ভব। চলুন, থাইরয়েড কমানোর কিছু উপায় নিচে দেখে নেওয়া যাক।
গর্ভাবস্থায় থাইরয়েড কমানোর উপায় গুলি
১. মানসিক চাপ কমাতে নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। গবেষণায় প্রমাণিত থাইরয়েডের সমস্যা কম থাকে।
২. প্রতিদিনের খাবারে আয়রন কম পরিমাণে থাকলেও থাইরয়েডের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আয়রনযুক্ত খাবার প্রত্যেকদিন খাওয়া উচিত ।
৩. যোগ ব্যয়াম ও ধ্যান থাইরয়েড গ্রন্থিতে রক্ত প্রবাহকে সঠিক রাখে। যার ফলে থাইরয়েডের সমস্যা কমতে থাকে ।
৪. আমাদের শরীরে যখন পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়োডিন থাকে না , তখন থাইরয়েড হরমোন দেহ তৈরি করতে পারে না । যা হাইপোথাইরয়েডিজম-এর দিকে পরিচালিত হয়ে। তাই আয়োডিন যুক্ত খাবার খান।
৫. আপনার যদি থাইরয়েড সমস্যা থাকে তাহলে আপনি প্রধানত চিনি খাবেন না চিনি খেলে শরীরের T3 ও T4— এই দুটি হরমোন উৎপন্ন হয় । যা একজন থাইরয়েড রোগীর জন্য খুবই খারাপ । তাই চেষ্টা করবেন চিনি থেকে বিরত থাকার । ।
৬. এন্টি অক্সিজেন যুক্ত খাবার যেমন ফল শাকসবজি দুধ এসব খাবার খান । এগুলি থাইরয়েডের সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে । এছাড়া ভিটামিন বি ১২ যুক্ত খাবার থাইরয়েড গ্রন্থিকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে । তাই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত খাবার আপনার ডায়েটে অবশ্যই রাখা দরকার ।
৭. অনেক সময় ভিটামিন বি এর অভাবে থাইরয়েড হয়ে থাকে এবং ভিটামিন বি এর সর্বশ্রেষ্ঠ উৎস হচ্ছে সূর্যের আলো । তাই দিনে কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ মিনিট সূর্যের রোদে সরষের তেল মেখে ঘোরাঘুরি করুন যেটা একজন রোগীকে একটা হেল্প করবে ।
৮. খাবার সময় মনোযোগ দিয়ে ভালোভাবে চিবিয়ে চিবিয়ে খান । খাবার সময় খুব বেশি তাড়াহুড়ো করে খাবে না, যেটা থাইরয়েড গ্রন্থির উপর ইফেক্ট করে । তাই খাবার সময় অবশ্যই চিবিয়ে চিবিয়ে খাবেন ।
৯. দোকানের খাবার এবং ফাস্টফুড যেমন এগরোল, চাওমিন, বিরিয়ানি, ভাজাভুজি, থেকে বিরত থাকুন। একজন থাইরয়েড রোগীর এইসব খাবার থেকে বিরত থাকলে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে অনেকটা ভালো থাকে ।
উপরের দেওয়া তথ্য গুলি আপনি যদি সঠিকভাবে মানেন তাহলে অবশ্যই একজন থাইরয়েড রোগীর জন্য অনেকটা হেল্প হবে । তাই আমি আশা করব থাইরয়েড কমানোর উপায় গুলি আপনি আপনার দৈনন্দিন জীবনে প্রত্যেকদিন ব্যবহার করবেন । তো চলুন থাইরয়েড সম্বন্ধে আরও কিছু তথ্য নিচে আমরা দেখিনিয় ।
থাইরয়েড নরমাল কত?
থাইরয়েড রোগীদের মধ্যে একটি সাধারণ প্রশ্ন হলো, থাইরয়েডের স্বাভাবিক মাত্রা কত? প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে থাইরয়েড মাত্রার স্বাভাবিক পরিসর হল 0.4 থেকে 4.0 mIU/L। কিছু গবেষণা পরামর্শ দেয় যে থাইরয়েডের স্বাভাবিক মাত্রা 0.45 থেকে 2.5 mIU/L হওয়া উচিত। অর্থাৎ, থাইরয়েডের স্বাভাবিক মাত্রা ২.৫ mIU/L। এই তথ্যগুলো যদি সঠিকভাবে অনুসরণ করেন, তাহলে আপনি সহজেই আপনার থাইরয়েডকে স্বাভাবিক মাত্রায় আনতে পারবেন।
আরো পড়ুন - বাংলালিংক নাম্বার চেক
থাইরয়েড হলে কি বাচ্চা হয় না?
হ্যাঁ, থাইরয়েড থাকলেও সন্তান ধারণ সম্ভব, তবে কিছু নিয়ম-কানুন এবং শর্ত মেনে চলতে হবে। থাইরয়েড নারীদের নিয়মিত মাসিক এবং প্রজনন ক্ষমতা, অর্থাৎ সন্তান ধারণের ক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে পারে।
বর্তমানে গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে থাইরয়েড সমস্যার প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে। এদের মধ্যে থাইরয়েডের কারণে সন্তানের উপর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা থাকে। অনেক সময় গর্ভবতী হওয়ার পরেও কিছুদিনের মধ্যে গর্ভপাতের ঘটনা ঘটে। তাই, সন্তান নেওয়ার আগে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে থাইরয়েড পরীক্ষা করানো উচিত।
যারা ইতিমধ্যে থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত, তারা সন্তান নিতে ভয় পান। তাদের জন্য বলছি, যদি আপনি সম্পূর্ণ সুস্থ হন, নিয়মিত ওষুধ গ্রহণ করেন এবং মনিটরিং করেন, তাহলে সন্তান নিতে আপনার কোনো ভয় নেই।
টিএসএইচ (TSH) হরমোনের মাত্রা ২.৫-এর নিচে নামানো সবচেয়ে নিরাপদ। তাই, থাইরয়েড সমস্যা থাকলে সন্তানের পরিকল্পনা করার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
সন্তান ধারণের পর বা গর্ভাবস্থার সময় প্রতি ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ পর থাইরয়েড পরীক্ষা করান। যদি রিপোর্ট স্বাভাবিক না আসে, তবে আপনাকে চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী ডেট বাড়াতে হতে পারে।
সারা গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন এবং নিয়মিত মনিটরিং করুন। যদি আপনার থাইরয়েড স্বাভাবিক থাকে, তাহলে আপনি সুস্থ ও সুন্দর সন্তান জন্ম দিতে পারবেন, এতে কোনো বাধা থাকবে না।
থাইরয়েড টেস্ট কিভাবে করে
থাইরয়েড টেস্ট সাধারণত রক্তের মাধ্যমে করা হয়। সাধারণত TSH, T4 এবং T3 এই তিনটি পরীক্ষার মাধ্যমে থাইরয়েডের কার্যকারিতা পর্যালোচনা করা হয়। প্রতিটি পরীক্ষার ধরন এবং পদ্ধতি সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হল।
প্রত্যেক মানুষের থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে ক্ষরিত হরমোন থাইরক্সিন শরীরে দুটি রূপে অবস্থান করে। বেশিরভাগ থাইরক্সিন হরমোন প্রোটিনজাত পদার্থের সাথে আবদ্ধ থাকে, কিন্তু কিছু পরিমাণে এটি মুক্ত অবস্থায় থাকে।
থাইরয়েড টেস্ট করার জন্য আপনাকে ডাক্তারের ল্যাবে যেতে হবে। পরীক্ষার সময় আপনাকে একটি চেয়ারে বসতে হতে পারে অথবা একটি টেবিলে শুয়ে থাকতে বলা হতে পারে।
যে হাত থেকে রক্ত নেওয়া হবে, সেই হাতটি উন্মুক্ত করতে হবে, অর্থাৎ হাতের পোশাকটি খুলতে হবে। একটি নার্স আপনার হাত থেকে একটি সিরিঞ্জের মাধ্যমে রক্ত নেবে। তিনি আপনার হাতটিকে উপরের দিকে তুলতে এবং সিরিঞ্জ ঢুকানোর স্থানে মালিশ করতে বলবেন।
থাইরয়েড পরীক্ষা সাধারণত দুইটি পদ্ধতিতে হয়ে থাকে T4 and TSH ।
T4 পরীক্ষাটি থাইরক্সিন পরীক্ষার জন্য পরিচিত। যদি T4 এর ফলাফল উচ্চ স্তরে হয়, তাহলে এটি ওভারঅ্যাকটিভ থাইরয়েড নির্দেশ করে। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে উদ্বেগ, ওজন হ্রাস, কম্পন এবং ডায়রিয়া অন্তর্ভুক্ত।
যদি আপনার TSH ২.০ এমএলইউ/মিলি এর উপরে মাপা হয়, তাহলে আপনার হাইপোথাইরয়েডিজমের ঝুঁকি বাড়ছে। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে ওজন বৃদ্ধি, ক্লান্তি, হতাশা এবং ভঙ্গুর চুল ও নখ অন্তর্ভুক্ত। এ পরিস্থিতিতে, আপনার ডাক্তার প্রতি বছর অন্তত একবার থাইরয়েড পরীক্ষা করার পরামর্শ দিতে পারেন এবং চিকিৎসা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
T4 এবং TSH এই দুটি পরীক্ষা অবশ্যই করাতে হবে।
আপনার যদি এই হরমোনগুলোর মাত্রা স্বাভাবিক থাকে, তাহলে আপনি ডাক্তার থেকে চিকিৎসা নেবেন। সঠিক পরামর্শ অনুযায়ী যদি আপনি এক থেকে দেড় বছর নিয়মিত ওষুধ গ্রহণ করেন, তাহলে আপনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠতে পারবেন।
থাইরয়েড কি ভালো হয়
থাইরয়েডের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা রয়েছে এবং অনেকের মনে একটি ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যে থাইরয়েড ভালো নয়। তবে এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। সঠিকভাবে এবং একজন ভালো ডাক্তারকে সঙ্গে নিয়ে পরামর্শ করলে, যদি নিয়মিত এক থেকে দেড় বছর ওষুধ গ্রহণ করা হয়, তাহলে থাইরয়েড ভালো হতে পারে। এ সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য নিচে তুলে ধরা হলো, যা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মতামত।
থাইরয়েড ভালো নয়, এই বিষয়টি একটি ভুল ধারণা। যদি আপনার হাইপোথাইরয়েডিজম থাকে, তাহলে আপনাকে সারা জীবন চিকিৎসা নিতে হতে পারে। তবে চিকিৎসা না নিলে, আপনার স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
হাইপারথাইরয়েডিজমের ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে, যদি কেউ নিয়মিত ১ থেকে ২ বছর চিকিৎসা নেন, তাহলে তাদের অবস্থার উন্নতি হতে পারে। থাইরয়েডক্সিনোসিসের চিকিৎসা রেডিও আয়োডিনের মাধ্যমে করা সম্ভব, তবে এটি সঠিকভাবে নির্বাচন করতে হয়।
থাইরয়েড সার্জারি করা যায়, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডাক্তারবাবুরা অ্যান্টিথাইরয়েড ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা করেন।
আরো পড়ুন - ওয়ালটন ফ্রিজ 10 সেফটি দাম কত
ওয়ালটন ফ্রিজ ১২ সেফটি দাম কত ২০২৪
ওয়ালটন ফ্রিজ ১১ সেফটি দাম কত ২০২৪
ওয়ালটন ফ্রিজ ১৬ সেফটি দাম কত ২০২৪